প্রকাশিত: ১৯/০৬/২০২১ ৯:০২ এএম

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও জাতিগত সংঘাত, আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিবাদ ও গৃহযুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ৮ কোটি ২০ লাখ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা-ইউএনএইচসিআর।

ইউএনএইচসিআর- এর তথ্য বলছে, গত এক দশকে এ সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে এবং বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

শুক্রবার বার্ষিক ‘গ্লোবাল ট্রেন্ডস রিপোর্টে’ ইউএনএইচসিআর এ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

গত বছরের শুরুতে করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করলে শরণার্থীবিষয়ক আবেদন ও দেশান্তরী হওয়ার হার কমে এসেছে। তবে এই মহামারির মধ্যে ক্রমাগত অত্যাচার-নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ২০২০ সালে ১ কোটি ১২ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে।

মহামারির কারণে অনেক দেশে সীমান্ত বন্ধ থাকায় অসহায় নাগরিকদের অধিকাংশই অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে দেশের নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর।

এ সময়কালে ২ লাখ ৫০ হাজার শরণার্থী নিজ দেশে ফিরতে পেরেছেন, ৩৪ হাজার নাগরিক তৃতীয় একটি দেশে পুনর্বাসিত হয়েছেন।

ইউএনএইচসিআরের ‘গ্লোবাল ট্রেন্ডস রিপোর্ট’ বলছে, বিশ্বজুড়ে উদ্বাস্তু সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমাদের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে যাতে এই দাঙ্গা-সংঘাত, নিপীড়ন বন্ধ হয়।’

সংস্থাটি আরও বলছে, ২০২১ সালে করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ শিথিল হয়ে গেলে সংঘর্ষ, সংঘাত আরও বেড়ে যেতে পারে। পাশাপাশি খাদ্য সঙ্কট চরম আকার ধারণ করবে। দুরে্যাগপূর্ণ আবহাওয়া তো রয়েছেই।

জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে, দক্ষিন সুদান, মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিক ও সিরিয়ায় দেখা দিতে পারে দুর্ভিক্ষ। বিশ্বব্যাপী চরম দরিদ্র মানুষের সংখ্যাও আরও বাড়তির দিকে যাবে।

বিদেশে বাস্তুচ্যুত এই মানুষদের দুই-তৃতীয়াংশই এসেছে মাত্র ৫টি দেশ থেকে। এর মধ্যে আছে সিরিয়া। দেশটিতে ১০ বছরের গহযুদ্ধে ১ কোটি ৩৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা দেশটির জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি। এসব মানুষের প্রায় অর্ধেকই বিদেশে চলে গেছে। আর বাকিরা দেশের ভেতরেই বাড়িঘর ছাড়া হয়ে আছে।

বিদেশে বাস্তুচ্যুত প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মানুষই আশ্রয় নিয়ে আছে প্রতিবেশী দেশগুলোতে। বাস্তুচ্যুত এসব মানুষদের মধ্যে বাড়ছে শিশুর সংখ্যা। ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া প্রায় ১০ লাখ নবজাতক জন্মের পর থেকেই শরণার্থী হিসেবে বেড়ে উঠছে। ফলে অনিশ্চয়তার মুখে আছে তাদের ভবিষ্যৎ।

তবে ইউএনএইচসিআর বলছে, কিছু দেশ এই শরণার্থীদের নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এ বছরই ৬২ হাজার ৫০০ এবং ২০২২ সালে ১ লাখ ২৫ হাজার শরণার্থী নেবে বলে কথা দিয়েছে। আর ভেনেজুয়েলার ১০ লাখের বেশি শরণার্থীকে স্থায়ী মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলম্বিয়া।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে আসিয়ান

রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় মিয়ানমারের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। পাশাপাশি ...

ফিলিস্তিনপন্থি গ্রুপকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন টিউলিপ

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে প্রো-প্যালেস্টাইন কর্মসূচির সংগঠন ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবে ...